Quantcast

E-mail: admin@kalersanko.com

Site Logo
Language Translator
 - 
Arabic
 - 
ar
Bengali
 - 
bn
English
 - 
en
Hindi
 - 
hi
Nepali
 - 
ne
Tamil
 - 
ta

অভাগিনীর অসমাপ্ত জীবন – প্রান্ত দত্ত

অভাগিনীর অসমাপ্ত জীবন - প্রান্ত দত্ত
Share on facebook
Facebook
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on pinterest
Pinterest
Share on pocket
Pocket

অভাগিনীর অসমাপ্ত জীবন

– প্রান্ত দত্ত

 

অপরূপ সৌন্দর্য্যে ঘেরা বৈচিত্র্যময় এই গ্রাম। সে গ্রামে জন্মগ্রহণ করে ফুটফুটে সুন্দর এক মেয়ে। নম্র-শান্তশিষ্ট

ছিলো মেয়েটির স্বভাব। মেয়েটি ছিলো বড়ই দুখিনী। নাম ছিলো তার প্রীতিলতা। ডাক নাম ছিলো তার প্রীতি।

তার বাবার পরিবারে অর্থ-বিত্ত জায়গা জমি যথেষ্ট পরিমাণ ছিল। কিন্তু সুখের পরিমানটা যথেষ্ট পরিমাণ ছিল না।

 

তার জন্মলগ্ন থেকে জীবনের সাথে লড়াই এবং সংগ্রাম শুরু হয়। তার জন্মগ্রহণ করার পর তিন মাস পর্যন্ত

অজ্ঞান থাকে। এই তিন মাস শুধু তার মুখ থেকে সাদা ফেনা বের হতো। যাইহোক,সে বিপদ কাটিয়ে উঠার পর

তার জীবনের আরেকটি ধাপের যাত্রা শুরু হয় । ছোটবেলায় থেকে প্রীতি বাবা-মায়ের অনেক ভক্ত ছিলো। বাবা

মায়ের পাশে সর্বোক্ষণ থাকতো প্রীতি। সে বাবা-মায়ের সকল কাজে সহযোগিতা করার চেষ্টা করতো। প্রীতি

ছোটবেলা থেকে ছিলো ভোজনরসিক একজন মানুষ।খেতে খুব পছন্দ করতো।তার কোনদিনও ভালো ভালো

 

খাবারের কোন আবদার ছিলো না।শুধু কোন কিছু সামান্য তরকারী দিয়ে বেশি করে ভাত খেয়ে নিতো। এতে

তার খাওয়ার তৃপ্তি মিটতো। কিন্তু তার এই স্বভাবটা পরিবারের অনেক জনের কাছে ভালো লাগতো না। সে

আবার স্পষ্টবাদী লোক ছিলো।অন্যায় দেখলে সামনাসামনি প্রতিবাদ করতো। এগুলো দেখে অনেকে অপছন্দ

এবং ঘৃণা করতো তাকে। সেগুলোকে নিয়ে সে মনে কিছু ভাবতো না। কারণ সে যে কাজগুলো করতো যা

এগুলো পুরুষদের কাজের সমান। তার ভাইবোনরা এসব কাজ করতো না। সে ভাবতো আমিও যদি কাজ না

 

করি তাহলে বাবা একা কিভাবে সবগুলো কাজ সামলাবে। কারণ তার বাবা ছিল একজন পঙ্গু মানুষ। সেজন্য

বাবার সকল কাজে সহযোগিতা করার চেষ্টা করতো। এভাবে সে দিনরাত বাবা মায়ের সাথে সব কাজে চালিয়ে

যায়। শৈশব জীবনটা অনেকেরই কাটে খেলাধুলায়।কিন্তু তার জীবনটা তেমন ছিল না।খেলাধুলায় সময় কাটতো

বাবা মায়ের সেবায়।

 

এভাবে দিন যায় রাত হয়। বছরের পর বছর শেষ হতে লাগলো। শৈশব জীবন পার করে ধীরে ধীরে সে

বিবাহযোগ্য হয়ে উঠেছে। এদিকে তার বড় বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়। এবার মা-বাবা তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য

যোগ্য পাত্রের খোঁজ করে কিন্তু তার জন্য যোগ্য পাত্র জোগাড় করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এদিকে গ্রামের মানুষ

নানা ধরনের কথা বলে তার বিবাহ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করে। নানান ফন্দি আঁটতে থাকে তারা। বিবাহ

সুষ্ঠুভাবে কার্য সম্ভব হয় না। মা-বাবা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে। অবশেষে খুঁজতে খুঁজতে মা-বাবার মনের মতো

একজন উপযুক্ত পাত্রকে খুঁজে পায়।

 

তার বিয়ে হলো। নানান ঘটনার মধ্যে দিয়ে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। যাইহোক, সে মনে মনে ভেবেছিলো স্বামীর

বাড়িতে এসে কপালে সুখটুকু জুটবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেখানেও সুখ তার কপালে জুটলো না। বিয়ে

হওয়ার সেদিন থেকে শুরু হয় তার জীবনের আরও একটি কঠিন যুদ্ধ । স্বামীর বাড়িতো নয় ছিলো যেন এক

যুদ্ধক্ষেত্র। তার স্বামীর ছিলো চার ভাই, তিন বোন। তার স্বামী ছিলো সেজো। তার দুই জ্যা ছিলো। দুইজনই

 

ছিলো খুবই দুষ্টু প্রকৃতির লোক। স্বামীর বাড়িতে তাকে নিম্ন বর্ণের জাত বলে অ্যাখ্যায়িত করে তার জা, ভাসুররা

বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে।অকথ্য ভাষায় তার সাথে কথা বলতো তারা। তাদের সাথে যৌথ

অবস্থায় থাকাকালীন তারা ভালোভাবে খেতে দিতো না। শুধু ছোট জাতের মেয়ে বলে তাকে কটুক্তি করতো।

 

সংসার ভিন্ন হয়েও সুখ হয়ে নি তাদের। জা, ভাসুর এবং বাড়ির অনেকে দুষ্টপ্রকৃতিদের পক্ষ নিয়ে এক পর্যায়ে

তাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে তারা নির্যাতন শুরু করে। স্বামী না থাকার সুযোগ নিয়ে তাকে তারা মারধর

শুরু করতো। বিভিন্নভাবে তাকে নির্যাতন করতো। সে একা তাদের সাথে পেরে উঠতো না । তারা চেয়েছিল

তাকে বাড়ি থেকে একেবারে উচ্ছেদ করে দিতে। যেন তার স্বামীর জায়গা সম্পত্তিগুলো একাই ভোগ করে পেতে

পারে। তার পাশে সহযোগিতা করার মতো কেউই ছিল না।তার স্বামীটিও তেমন প্রতিবাদী ছিলো না । এরই মধ্যে

 

তার কোল আলো করে জন্মনিলো পুত্র সন্তান।যা দেখে তার জা, ভাসুররা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে

তার সন্তানকে তারা মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। তার বড় জার কন্যা তার পেটে সন্তান থাকাকালীন পেটের মধ্যে

লাথি মেরে তাকে এবং তার সন্তানকে পৃথিবীতে থেকে বিদায় করে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু কপাল ভালো থাকায়

সে যাত্রায় বেঁচে গেল। সন্তানকে নিয়েও বিভিন্ন ঘটনার সম্মুখীন হয় প্রীতি। সে ভাবলো আমি না হয় এখানে যুদ্ধ

করে থাকলাম, কিন্তু এখানে থাকলেতো আমার স্বামী ও সন্তানকে হারাতে হবে । এর দেড় বছর পর, নিরূপায় হয়ে

 

সে একদিন তার স্বামী সন্তানদের নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। কিন্তু যাবে কোথায়? বাড়ি থেকে বের হয়ে

এদিকে ওদিকে পাগলের মতো স্বামী সন্তানদের নিয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে থাকে। আজ এই জায়গায়তো

কাল অন্য জায়গায়। সেখানে সুখ নেই! মানুষের নানা রকম গালমন্দ কথা সবসময় শুনতে হয় তাকে। এদিকে

এই জীবন সংগ্রামের মাঝে দ্বিতীয় সন্তানের জননী হয় সে। শুরু হয় তাদের জীবনের আরেকটি নতুন অধ্যায়।

এভাবে আজও তার দিন কাটছে।তার জীবনকথার গল্প আজও অসমাপ্ত রয়ে গেল। আজও প্রীতি তার স্বামী

সন্তানদের নিয়ে দেশে দেশে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু একটু সুখের ঠিকানায়।

 

গল্প, লেখা জমা দেওয়ার ফর্ম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on print
Print

সম্পর্কিত পোষ্ট……

প্রিয় লেখা
Серо белая кухня. Room b223, 12/f, block b, tuen mun industrial centre, 2 san ping circuit, tuen mun, n. Sweatshirts.