ষাঁড় ঢুকেছে চায়না শপে
– মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
ষাঁড় ঢুকেছে চায়না শপে কেনাকাটার ছুঁতায়,
শপকিপারের মাথা খারাপ এমন ক্রেতার গুঁতায়।
ঝনঝনিয়ে প্লেট পড়ে যায়, খনখনিয়ে বাটি,
পায়ের নিচে ডিনার সেটের চলছে ফাটাফাটি।
এদিক যখন শিঙে বাধে, ওদিক বাধে পেটে,
একমনে ষাঁড় জিনিসপাতি দেখছে হেঁটে হেঁটে।
পিরিচগুলো পড়ছে ডানে, কাপগুলো তার বাঁয়ে,
গ্লাস ট্রে বোল স্যুপের বাটি ভাঙছে লেজের ঘায়ে।
শপকিপারের রাগ চড়ে যায়, সঙ্গে ক্রেতাদেরও,
আসলো সবাই তেড়েমেড়ে—ষাঁড় ব্যাটা তুই বেরো।
কিন্তু সে ষাঁড় বেরোবে কি—শপিং আরও বাকি,
মাথার পরে ঝাড়বাতিরাও হালকা খেল ঝাঁকি।
ষাঁড় হয়ে কেউ জন্ম নিলে ষাঁড়ই থাকে—ষাঁড়ই,
কী আর করা—দোকানি ওর মাথায় মারে বাড়ি।
চারদিকে তার চার পা তুলে লুটিয়ে পড়ে সে ষাঁড়,
সবাই হেসে টিটকারি দেয়, ‘উঠল কি না প্রেশার!
এক ঘায়ে তুই কাত হয়ে যাস্, হারিয়ে ফেলিস্ জ্ঞানও,
গাধার মতো চায়না শপে ঢুকতে এলি কেন?’
কিন্তু সে ষাঁড় শুনবে কী আর, কি দেবে তার জবাব?
পড়ে গিয়ে তার যে এখন জ্ঞানের বড় অভাব।
জ্ঞান ফিরে পায় ষাঁড়টা শেষে ঠাণ্ডা পানির ছিটায়,
ভাবছে কেবল সবাই কেন তাকে ধরে পিটায়।
জ্ঞান দিলো সেই সুধীসমাজ, ‘হতচ্ছাড়া বোকা!
ষাঁড়গোরুদের চায়না শপে উচিৎ কিনা ঢোকা?’
সবিনয়ে ষাঁড় দুপাশে নাড়ায় মাথা—না-না—
জ্ঞানের ভেতর এইটুকু জ্ঞান তারও আছে জানা।
দোকানি কয়, ‘ঢুকলি কেন তবে কপাল পোড়া!
কেমন করে ভাঙা বাসন লাগবে এখন জোড়া?’
এবার সে ষাঁড় মুখ নাড়াল—বলল, ‘সবই মানি,
কিন্তু আমি নিজেই যে ষাঁড় তা কি আমি জানি?’